অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:
জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী দিবস বুধবার (৯ আগস্ট) বিশ্বব্যাপী পালন করা হবে। বিশ্বের ৯০টি দেশের প্রায় ৩৭ কোটির অধিক আদিবাসী দিনটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করবে। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ৩০ লাখেরও বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণ দিনটি উদযাপন করবে।
জাতিসংঘ বলছে, আদিবাসীদের স্বশাসন এবং তাদের স্বীকৃতি দিয়ে ক্ষমতায়নের এখনই উপযুক্ত সময়। ১৯৯৪ সালে রেজুলেশন ৪৯/২১৪ গ্রহণ করে ৯ আগস্টকে আদিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। দিনটি পালনের জন্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে আহ্বান জানানো হয় তখনই। এরপর থেকে গত ২৩ বছরে বৈশ্বিক পর্যায়ে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তবে বাংলাদেশে এখন খোদ ওই জনগোষ্ঠীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকারই করা হয় না। তারা আদিবাসী নাকি উপজাতি তা নিয়ে ঘোর আপত্তি আছে নৃ-বিজ্ঞানীদের মধ্যেও। অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক কারণে কোনো দলই চায় না, বাঙালিকে পাশ কাটিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে।
আদিবাসীদের সঙ্গে বৈষম্য, তাদের অবহেলা এবং তাদের নিরাপত্তা শঙ্কা বন্ধ করার আহ্বান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকারকর্মীরা। ৯ আগস্ট (বুধবার) বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এ আহ্বান জানান তারা।
জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়েই আদিবাসীরা নির্যাতিত হচ্ছে, সরকার কেবল তাদের নিয়ে রাজনীতি করে; অথচ তারা যখন মার খায় কিংবা নিজেদের জমি হারায়, তখন কেউ এগিয়ে আসে না। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন দরকার। জাতিসংঘের আদিবাসী সম্পর্কিত স্থায়ী ফোরামের প্রধান ভিক্টোরিয়া তাউলি স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আদিবাসীদের ১০ বছর আগের তুলনায় বেশি সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তাদের আগের তুলনায় এখন বেশি করে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়তে হচ্ছে। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, তারা সব দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। তারা দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে।
আদিবাসীরা তাদের জমি এবং সম্পদ হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হারাতে বসেছে তারা।
নারীদের ক্ষেত্রে সেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। তারা একই সঙ্গে স্বজাতি এবং অন্যদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তারা তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারে না। অথচ পুরুষের তুলনায় তাদের বেশি ছাড়া কম কাজ করার সৌভাগ্য কখনোই হয় না।
হর-হামেশা তারা খুন হচ্ছে, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, জমি হারাচ্ছে, জঙ্গিদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে; কিন্তু নিজেদের অধিকারটা কোনোভাবেই পাচ্ছে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এবারের আদিবাসী দিবসে জাতিসংঘ চায়, আদিবাসীদের ওপর সহিংসতা, বর্ণবাদী আচরণ নির্মূল হোক।