অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
ভবিষ্যতে দেশে বিড়ি থাকবে না, সরকার সেই পলিসি নিয়েছে অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন এবং এর সাথে জড়িত অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে সোমবার তারা জানান, অর্থমন্ত্রী এই কথার মাধ্যমে আবারো প্রমান করলেন তিনি এদেশের গরীব মানুষের পক্ষে নন। তিনি বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। নেতারা বলেন, এই শিল্পের সঙ্গে লাখ লাখ শ্রমিক জড়িত। যাদের বেশির ভাগই হত-দরিদ্র, নদী ভাঙ্গা এলাকার স্বামী পরিত্যক্ত নারী। সিগারেট ও বৃটিশ আমেরিকনা কোম্পানীর কথা শুনে বিড়ি শিল্প বন্ধ করে দিলে কর্মসংস্থান হারাবে লাখ লাখ খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষ।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই ২০১৭, রোববার অর্থমন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীসহ দেশীয় সিগারেট কোম্পানীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে দেশে আর বিড়ি থাকবে না। এ জন্য সরকার পলিসি গ্রহণ করেছে। নেতারা বলেন, বিড়ি শিল্পের প্রতি মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এই বিরুপ আচরণ নতুন নয়, তিনি অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বিড়ি শিল্পের উপর বিমাতাসূলভ আচরণ করেই আসছেন এবং এ বছরও বাজেট প্রস্তুতির আগে বিভিন্ন সভা সমিতিতে বিড়িকে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে সারাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ইতোপূর্বে অর্থমন্ত্রীর এ ধরণের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মহান জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন চলাকালে বিভিন্ন মন্ত্রীসহ সংসদ সদস্যগণ প্রতিবাদ করেছেন। তার এই ভূমিকাটি যে অযৌক্তিক তার স্বপক্ষে মহান জাতীয় সংসদে তার দলেরই একাধিক সংসদ সদস্য বক্তব্যে তুলে ধরেছেন।
আমরা বিনয়ের সাথে মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে,তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী। এ সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন এদেশের ১৬ কোটি জনগণ। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সাথে আমরা এটাও লক্ষ্য করছি যে, মাননীয় অর্থমন্ত্রী ১৬ কোটি জনগণের না হয়ে যেন সিগারেট কোম্পানির অর্থমন্ত্রী হিসেবে আচার-আচরণ করছে।
প্রায় ২৫০ বছর আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দালালি করে বাংলার স্বাধীনতা যারা বিসর্জন দিয়েছিল, ইতিহাসে তাদের অবস্থান আজ সুনির্দিষ্ট হয়ে রয়েছে। নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর সহযোগী হিসেবে মাননীয় অর্থমন্ত্রী একই কাতারে নিজেকে ফেলবেন না বলে আমাদের প্রত্যাশা।
এছাড়াও মাননীয় অর্থমন্ত্রী সংবিধান সম্মুন্নত রাখার শপথ নিয়েছেন। সংবিধানে সুস্পষ্ট ভাবে কারো প্রতি বিরাগ বা অনুরাগ করার সুযোগ রাখা হয়নি। কিন্তু মাননীয় অর্থমন্ত্রী বিড়ির প্রতি বিরাগ এবং একই শিল্পভুক্ত সিগারেট এর প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করে তার শপথকেই ভঙ্গ করছেন। শপথ ভঙ্গকারী কারোর মন্ত্রী থাকার নৈতিক অধিকার আছে কিনা তার বিচারের ভার আমরা জনগণের উপর ছেড়ে দিচ্ছি।
পরিশেষে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বৃহত্তর জনগণের স্বার্থে বিশেষত হতদরিদ্র নারী শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে তার বিড়ি শিল্পের প্রতি হঠকারী আচরণ থেকে নিভৃত হবেন এবং তামাক জাতীয় সকল পণ্যকে একই দৃষ্টিতে দেখবেন।