ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

কর ফাকি সংক্রান্ত আলোচিত ‘পানামা পেপার্সে’ নাম থাকার জের ধরে পদত্যাগে বাধ্য হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।শুক্রবার দেশটির সবোর্চ্চ আদালত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির দায়ে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেন। এরপরই তিনি পদত্যাগ করেন।

আর নওয়াজের পদত্যাগ সূত্রে দুই বছর পর বিশ্বজুড়ে ফের আলোচনার জন্ম দিয়েছে বহুল আলোচিত ‘পানামা পেপারস’।সবাই জানার চেষ্টা করছেন পানামা পেপার্সে নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ ছিল।আর তার মতো যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তাদের পরিণতিই বা কী হয়েছে? নওয়াজের মতো সবাই কি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন?

২০১৫ সালে পানামাভিত্তিক আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান ‘মোসাক ফনসেকা’র এক কোটিরও বেশি নথি ফাঁস হয়ে যায়। এসব নথিকেই ‘পানামা পেপারস’ নামে অভিহিত করা হয়।ফাঁস হওয়া ওইসব পেপারসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পরিবারের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের তথ্য প্রকাশ করা হয়।এতে নওয়াজ শরীফসহ তার চার ছেলেমেয়ের মধ্যে মরিয়ম, হাসান ও হোসেনের নামও উঠে আসে। নওয়াজের সন্তানরা মোসাক ফনসেকার মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির মালিকানার অংশীদার।

ওইসব নথিতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ফুটবলার মেসি থেকে শুরু করে বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনসহ বিশ্বের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের নাম উঠে আসে।ধনী আর ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা কীভাবে, কোন কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তা বেরিয়ে আসে এসব তথ্যে।

নওয়াজ পরিবারের এই কেলেঙ্কারি নিয়ে বিরোধী দলগুলো ফুঁসে ওঠে। ওই সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নওয়াজের পরিবারের কাছে সম্পদের হিসাব দেয়ার দাবি জানায়।পরে সংসদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ ও পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের আবেদনের ভিত্তিতে দুর্নীতির অভিযোগটি আমলে নেয় আদালত।

অভিযোগের বলা হয়, লন্ডনে নওয়াজ পরিবারের যে সম্পদ আছে তার লভ্যাংশের মালিক ছিলেন মরিয়ম।ওই সম্পদে তার দুই ভাই হাসান ও হুসেইন শরিফের যৌথ মালিকানা রয়েছে।মরিয়ম বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের তার সম্পদের বিবরণে মেয়ের প্রপার্টি ও ফ্ল্যাটের বিষয়টি উল্লেখ করা উচিত ছিল।

তবে নওয়াজ বরাবারই অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। তার দাবি পাকিস্তন প্রতিষ্ঠিত হবার ২৫ বছর আগেই তার বাবা ব্যবসা শুরু করেন।ঢাকায়ও নওয়াজ শরীফের বাবার শিল্প কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় সেটা আর হয়নি বলেও এক ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। তদন্ত শুরু হয় নওয়াজ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।দীর্ঘ তদন্ত শেষে শুক্রবার পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির মামলায় প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণা করেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের পরপরই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এর আগে ‘পানামা পেপারসে’ কর ফাঁকি ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের তথ্য ফাঁসের পর বিক্ষোভের মুখে গত বছর পদত্যাগ আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর গুনলাগসন করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব এশিয়া কাপ জয়ীদের মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দেবে বিসিবি

নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

আপডেট সময় ১২:১৯:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

কর ফাকি সংক্রান্ত আলোচিত ‘পানামা পেপার্সে’ নাম থাকার জের ধরে পদত্যাগে বাধ্য হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।শুক্রবার দেশটির সবোর্চ্চ আদালত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির দায়ে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেন। এরপরই তিনি পদত্যাগ করেন।

আর নওয়াজের পদত্যাগ সূত্রে দুই বছর পর বিশ্বজুড়ে ফের আলোচনার জন্ম দিয়েছে বহুল আলোচিত ‘পানামা পেপারস’।সবাই জানার চেষ্টা করছেন পানামা পেপার্সে নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ ছিল।আর তার মতো যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তাদের পরিণতিই বা কী হয়েছে? নওয়াজের মতো সবাই কি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন?

২০১৫ সালে পানামাভিত্তিক আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান ‘মোসাক ফনসেকা’র এক কোটিরও বেশি নথি ফাঁস হয়ে যায়। এসব নথিকেই ‘পানামা পেপারস’ নামে অভিহিত করা হয়।ফাঁস হওয়া ওইসব পেপারসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পরিবারের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের তথ্য প্রকাশ করা হয়।এতে নওয়াজ শরীফসহ তার চার ছেলেমেয়ের মধ্যে মরিয়ম, হাসান ও হোসেনের নামও উঠে আসে। নওয়াজের সন্তানরা মোসাক ফনসেকার মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির মালিকানার অংশীদার।

ওইসব নথিতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ফুটবলার মেসি থেকে শুরু করে বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনসহ বিশ্বের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের নাম উঠে আসে।ধনী আর ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা কীভাবে, কোন কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তা বেরিয়ে আসে এসব তথ্যে।

নওয়াজ পরিবারের এই কেলেঙ্কারি নিয়ে বিরোধী দলগুলো ফুঁসে ওঠে। ওই সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নওয়াজের পরিবারের কাছে সম্পদের হিসাব দেয়ার দাবি জানায়।পরে সংসদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ ও পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের আবেদনের ভিত্তিতে দুর্নীতির অভিযোগটি আমলে নেয় আদালত।

অভিযোগের বলা হয়, লন্ডনে নওয়াজ পরিবারের যে সম্পদ আছে তার লভ্যাংশের মালিক ছিলেন মরিয়ম।ওই সম্পদে তার দুই ভাই হাসান ও হুসেইন শরিফের যৌথ মালিকানা রয়েছে।মরিয়ম বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের তার সম্পদের বিবরণে মেয়ের প্রপার্টি ও ফ্ল্যাটের বিষয়টি উল্লেখ করা উচিত ছিল।

তবে নওয়াজ বরাবারই অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। তার দাবি পাকিস্তন প্রতিষ্ঠিত হবার ২৫ বছর আগেই তার বাবা ব্যবসা শুরু করেন।ঢাকায়ও নওয়াজ শরীফের বাবার শিল্প কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় সেটা আর হয়নি বলেও এক ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। তদন্ত শুরু হয় নওয়াজ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।দীর্ঘ তদন্ত শেষে শুক্রবার পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির মামলায় প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণা করেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের পরপরই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এর আগে ‘পানামা পেপারসে’ কর ফাঁকি ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের তথ্য ফাঁসের পর বিক্ষোভের মুখে গত বছর পদত্যাগ আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর গুনলাগসন করেন।