অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
ভারতীয় উপমহাদেশে যোগ ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ইতিহাস প্রায় পাঁচ হাজার বছরের। ব্যস্ততা ও জীবনযাপনের জটিলতার কারণে গত শতাব্দীর শেষের দশক থেকে আবারও প্রাকৃতিক এই চিকৎিসা পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে মানুষ। প্রতিদিনের রান্নাও এখন আয়ুর্বেদিক রেসিপিতে করার পরামর্শ দিচ্ছেন কোনো কোনো শেফ। অনেক চিকিৎসক প্রায়শই আয়ুর্বেদের ৬ উপকরণ নিয়মিত খাওয়ার গুরুত্ব কথা তুলে ধরেন। এবার জেনে নেয়া যাক, কোন ৬ উপাদান নিয়মিত খেলে আপনি পেতে পারেন সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবন-
কাঁচামরিচ
কাঁচামরিচ আমরা প্রতিদিনই তরকারিতে ব্যবহার করে থাকি। আবার ঝালমুড়ি, সালাদ, সিঙারার সঙ্গে কুঁচি কুঁচি করে কেটে কাঁচাও খাই। তবে অনেকে ঝালের কারণে এটিকে এড়িয়ে চলেন।
কাঁচামরিচ যেমন ক্ষত সারিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, তেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই প্রতিদিন কাঁচা বা তরকারির সাথে কাঁচামরিচ খাওয়ার অভ্যাস করার পরামর্শ পুষ্টিবিদদের।
হলুদ
রান্নায় নিত্য ব্যবহার্য একটি উপাদান হলুদ। হলুদের রয়েছে নানা ভেষজ গুণাবলী। এছাড়া ক্ষত নিরাময়ের আয়ুর্বেদিক ওষুধেও হলুদ ব্যবহার করা হয়।
পেঁপে
পেঁপে আমরা কাঁচা অবস্থায় সবজি ও সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকি। আর পাকা পেঁপে একটি জনপ্রিয় মিষ্টি ফল। কাঁচা ও পাকা পেঁপেতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি এই ফলের বীজে থাকা উৎসেচক ক্যানসার রুখতে সাহায্য করে।
রসুন
রসুনের ঔষধী গুন অনেকে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্তত ১ কোয়া করে রসুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। রসুন ত্বক ভালো রাখে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত পরিষ্কার করে ডিটক্স করতে সাহায্য করে।
গবেষকদের মতে, রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার যেমন- মূত্রাশয়, স্তন, পাকস্থলি ইত্যাদি বিরুদ্ধে কাজ করে।
আদা
সতেজ এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে রস খেলে হজম শক্তি বাড়ে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। আদা-চা অন্ত্রের নড়াচড়া প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
আদায় জিঞ্জারোল নামের উপাদান আছে, যা অ্যান্টি অ্যাক্সিড্যান্ট, প্রদাহরোধী ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। রিউম্যাটিক ডিজঅর্ডার, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে আদা।
গরম মশলা
মরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি ও এলাচ খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। যাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য দারুচিনি বেশ উপকারী। জিরা গরম মসলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে আছে ‘অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা হজমে সাহায্য করে, হৃৎক্রিয়া ঠিক রাখে ও বিপাক প্রক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।
আয়ুর্বেদিকের মধ্যে লবঙ্গকে দাঁতের সব রোগের সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি দাঁত ব্যথা ও ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গ অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এছাড়া দারুচিনি, গোল মরিচ ও জিরা বলিরেখা পড়ার গতি ধীর করে। এদের আছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্ষমতা।