অাকাশ বিনোদন ডেস্ক:
শুরু হয়ে গেলো সৌন্দর্য ও ফ্যাশনের মাসব্যাপী উৎসব ‘মিস ওয়ার্ল্ড’। চাকচিক্যময় এই প্রতিযোগিতার ৬৭তম আসরের প্রথম অফিসিয়াল অনুষ্ঠান ‘ড্যান্সেস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর অডিশন জমে উঠেছে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ জেসিয়া ইসলাম। স্বপ্ন নিয়ে চীনে পা রাখা এই তরুণীর বিশ্বসুন্দরী হওয়ার মিশন শুরু হলো এর মধ্য দিয়ে।
চীনে যাওয়ার পর থেকেই মূলত ‘ড্যান্সেস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ সেগমেন্টের মহড়া শুরু করেন জেসিয়া। তার মতো সব সুন্দরী অডিশনে রঙিন, ঝলমলে আর বাহারি পোশাক পরে হাজির হন। হৈ-হুল্লোড় করে মহড়ায় সময় কাটছে তাদের।
‘ড্যান্সেস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ অনেক বছর ধরেই ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মাধ্যমে প্রতিযোগীরা পোশাক ও নাচে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরার সুযোগ পান। সবার অংশগ্রহণে এ আয়োজন হয়ে ওঠে দর্শনীয়। আশা করা হচ্ছে, সোনালি আঁশ পাট আর লাল-সবুজের মিশেলে দেশজ সংস্কৃতি তুলে ধরে সবার মন জয় করবেন জেসিয়া।
এদিকে গত ১৯ অক্টোবর চীনের গুয়াংজু বিমানবন্দরে জেসিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীদের ‘মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭’ প্রতিযোগিতায় স্বাগত জানিয়েছে মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ। এবার মোট ১২০ দেশের সুন্দরীরা মুকুটের জন্য লড়তে গেছেন সেখানে। তারা উঠেছেন গুয়াংজোর শহরের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে।
মিস ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের চেয়ারম্যান জুলিয়া মোরলের স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ রয়েছে, চীনে থাকাকালে জেসিয়ার থাকা-খাওয়া ও ভ্রমণের যাবতীয় খরচ বহন করবেন আয়োজকরাই। মূল প্রতিযোগিতার আগে অডিশন ও মহড়ার পাশাপাশি অন্য সুন্দরীদের সঙ্গে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানও ঘুরে দেখবেন তিনি।
মিস ওয়ার্ল্ড-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে কিছুদিন আগে অন্যান্য প্রতিযোগীর পাশাপাশি যুক্ত হয় জেসিয়ার ছবি। ‘কনটেস্টেন্টস’ অপশনে তার ছবির সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে তার কিছু তথ্য। তিনি শিক্ষার্থী, বয়স-১৮ বছর, উচ্চতা-১৭২ সেন্টিমিটার। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে দক্ষ। তার লক্ষ্য ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়া। ভালো লাগে ক্রিকেট ও বাস্কেটবল। নাচের প্রতি আছে আলাদা আগ্রহ। র্যাম্প ড্যান্সিংয়ে এই তরুণীর আছে বিশেষ গুণ। ঘুরে বেড়ানো, ছবি দেখা ও গান শোনা পছন্দ। দ্য স্ক্রিপ্ট ব্যান্ডের ‘হল অব ফেম’ ও জর্জ মাইকেলের ‘কেয়ারলেস হুইসপার’ তার পছন্দের দুটি গান। জেসিয়ার ব্যক্তিগত লক্ষ্য— অভিভাবকদের শিক্ষিত করা।
আগামী ৩১ অক্টোবর শিমেলং ওশান কিংডমে হবে এবারের আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এখানে মিস ওয়ার্ল্ডে অংশ নেওয়া দেশগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হবে। নানান রঙের পোশাকে সেজে আসা ৫০০ পারফর্মারের পরিবেশনা ও প্রতিযোগীদের প্যারেড দেখতে হাজির থাকবে ১০ হাজার দর্শক।
এদিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সুন্দরীদের সঙ্গে জেসিয়াকে লড়তে হবে টপ মডেল, ট্যালেন্ট, মাল্টিমিডিয়া, স্পোর্ট, বিউটি উইথ অ্যা পারপাসে। এরপর হেড টু হেড চ্যালেঞ্জে অংশ নেবেন শীর্ষ ৪০ প্রতিযোগী। তাদের মধ্য থেকে নির্বাচন করা হবে সেরা ২০। বিচারক হিসেবে থাকবেন আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফিলিপাইন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে।
কার মাথায় যাবে বিশ্বসুন্দরীর মুকুট সেই ফয়সালা হবে আগামী ১৮ নভেম্বর। ওইদিন চীনের সানাইয়া সিটি এরেনায় হবে মিস ওয়ার্ল্ড ফাইনাল। এখানে থাকবে চোখধাঁধানো সৌন্দর্য, ফ্যাশন ও বিশ্বসেরা পারফর্ম্যান্সের সম্মিলন। এবারের আসর উপস্থাপনা করবেন টিম ভিনসেন্ট, মেগান ইয়াং ও স্টিভ ডগলাস। নতুন মিস ওয়ার্ল্ডের মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবেন বর্তমান বিশ্বসুন্দরী স্টেফানি দেল ভালে। অনুষ্ঠানটি ডিজাইন করছে বেইজিং রাইজ।
১৬ বছর পর ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের কোনও সুন্দরী। বাংলাদেশ থেকে সবশেষ ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর ৫১তম মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তাবাসসুম ফেরদৌস শাওন। ১৯৯৪ সালে প্রথম মিস বাংলাদেশ অংশ নেন বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায়। তিনি ছিলেন আনিকা তাহের। এরপর ইয়াসমিন বিলকিস সাথী (১৯৯৫), রেহনুমা দিলরুবা চিত্রা (১৯৯৬), শায়লা সিমি (১৯৯৮), তানিয়া রহমান তন্বী (১৯৯৯) ও সোনিয়া গাজী (২০০০) মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।