আকাশ জাতীয় ডেস্ক :
বগুড়ার ধুনটে বাঙালি নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ গৃহবধূ আয়শা খাতুনের (২০) সন্ধান বুধবার বিকাল পর্যন্ত গত তিন দিনেও মেলেনি। কুসংস্কারে বিশ্বাসী গ্রামবাসী গত মঙ্গলবার এক স্থানীয় কবিরাজের মাধ্যমে ‘জিন হাজির’ করান।
এর আগে তার নির্দেশমতো স্বজনরা নদীতে সাতটি দেশি মুরগির ডিম, এক লিটার গরুর দুধ ফেলেন ও নদীর তীরে গর্ত খুঁড়ে সেখানে গোবর পুঁতে রাখেন। এরপরও তাকে জীবিত বা মৃত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিখোঁজ গৃহবধূ আয়শা খাতুন বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের বিলচাপড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবু বক্করে স্ত্রী। তিনি গত ১৬ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির পাশে বাঙালি নদীতে গোসল করতে যান। একপর্যায়ে তিনি নিখোঁজ হন।
পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসীরা নদীতে অনেক খোঁজ করেও তাকে উদ্ধার করতে পারেননি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সোমবার বেলা ১১টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নদীতে অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়। ওই দিন বিকালে ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি কবিরাজ বেশে সেখানে হাজির হন। আয়শা বেগমকে উদ্ধারের জন্য তার নির্দেশে স্বজনরা বিশ্বাস করে নদীতে সাতটি দেশি মুরগির ডিম ও এক লিটার গরুর দুধ ফেলেন। এছাড়া নদীর তীরে গর্ত খুঁড়ে সেখানে গরুর গোবর পুঁতে রাখেন। এমন দৃশ্য দেখতে নদী তীরে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় করেন।
স্থানীয় আব্দুল হামিদ জানান, কবিরাজ রফিকুল ইসলাম তার সঙ্গে নিয়ে আসা এক নারীর ওপর জিন হাজির করান। ওই নারী বলেন, তাকে (নিখোঁজ নারী) আরও দুই দিন পর নদী থেকে ভাসিয়ে তোলা হবে। এরপরই ওই কবিরাজ তার পারিশ্রমিক নিয়ে চলে যান। তিনি আশ্বাস দেন, দুই দিন পর আয়শা খাতুনকে পাওয়া যাবে।
ধুনট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম জানান, বুধবার বিকাল পর্যন্ত নদীতে নিখোঁজ গৃহবধূর সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাজশাহী থেকে ডুবুরি নিয়ে এসে বিলচাপড়ি গ্রামে বাঙালি নদীতে তল্লাশি করেও তার সন্ধান মেলেনি।