ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আমরা ৪৭ ও ৭১-এ প্রতারিত হয়েছি : হাসনাত আবদুল্লাহ সাদপন্থিরা হাসনাত ও সারজিসের সঙ্গে মিথ্যাচার করেছে: মামুনুল হক ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৭ জন খালাস ওবায়দুল কাদেরের দেশে থাকা-না থাকার প্রমাণ সরকারের হাতে নেই : শফিকুল আলম বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন : দুলু নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে : ডা. শাহাদাত কিংস পার্টির গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করবে জনগণ: ব্যারিস্টার রুমিন রাজধানীতে যুবদলের কর্মী সম্মেলন বিজয় দিবসে মোদীর বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে স্বৈরাচারের মাথা পালিয়েছে, লেজ রয়ে গেছে : তারেক রহমান

১৭ বছর পর কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি পেলেন আবদুল মালিক

আকাশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত কুখ্যাত গুয়ানতানামে বে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আরও এক বন্দি। মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু নামের ওই বন্দি এরইমধ্যে নিজ দেশ কেনিয়ায় ফিরেছেন। গত ১৭ বছর ধরে তিনি গুয়ানতানামো কারাগারে বন্দি ছিলেন।

আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তির পর এখন কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২৯ জন বন্দি আছেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন থেকে গতকাল মঙ্গলবার আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তি ঘোষণা দেয়। বলা হয়েছে, গত মাসে বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছেন।

কেনিয়ার মোম্বাসায় ২০০৭ সালে দেশটির কর্তৃপক্ষ আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেফতার করে। কয়েক সপ্তাহ পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে আল-কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল।

গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দিদের থাকা না–থাকাসংক্রান্ত পর্যালোচনা পরিষদ ২০২১ সালে নির্ধারণ করে যে আবদুল মালিক বাজাবু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আর উল্লেখযোগ্য হুমকি নন। কাজেই তার হুমকি থেকে রক্ষারও আর প্রয়োজন নেই।

আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তিপ্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল ‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামের একটি সংগঠন। বাজাবুর মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। বলেছে, এই ব্যক্তি কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।

মুক্তিপ্রক্রিয়ায় আবদুল মালিক বাজাবুকে সহায়তা দেওয়া একজন আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, নিরীহ একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়টায় বন্দি রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাকে এমন একটা সময়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল, যখন তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।

নাইন–ইলেভেনের হামলার পর তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ চলার সময় ২০০২ সালে এই গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু হয়। কিউবার কাছে মার্কিন এক সামরিক ঘাঁটিতে এই কারাগার অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কমিশনের এক আইনি ব্যবস্থায় এটি পরিচালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত আদালতে যেসব সুযোগ–সুবিধা থাকে, সেখানে সেগুলো নেই।

এ কারাগারে বন্দীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যেখানে বিনা অভিযোগে অনেককে আটকে রাখা হয়। এমনকি কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা জানারও আইনি ক্ষমতা দেওয়া হয় না তাদের।

এই কারাগারে একসময় ৮০০ বন্দি ছিলেন। পেন্টাগনের হালনাগাদ তথ্য, এখন গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২৯ জন বন্দি আছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন স্থানান্তর করার মতো উপযুক্ত পর্যায়ে রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ‘কালো এলাকা’ হিসেবে পরিচিত সিআইয়ের গোপন ডেরায় থাকতেন। সেখানে তাদের ‘ব্যাপকমাত্রার জিজ্ঞাসাবাদ’–এর নামে নির্যাতন করা হতো। এই কার্যক্রম অনুমোদন করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরবর্তী সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে আইনি জটিলতা আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপে ওবামার এ উদ্যোগ সফল হতে পারেনি

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১৭ বছর পর কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি পেলেন আবদুল মালিক

আপডেট সময় ১২:০৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আকাশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত কুখ্যাত গুয়ানতানামে বে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আরও এক বন্দি। মোহাম্মদ আবদুল মালিক বাজাবু নামের ওই বন্দি এরইমধ্যে নিজ দেশ কেনিয়ায় ফিরেছেন। গত ১৭ বছর ধরে তিনি গুয়ানতানামো কারাগারে বন্দি ছিলেন।

আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তির পর এখন কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২৯ জন বন্দি আছেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন থেকে গতকাল মঙ্গলবার আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তি ঘোষণা দেয়। বলা হয়েছে, গত মাসে বাজাবুর কেনিয়ায় প্রত্যাবাসনের বিষয়টি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মার্কিন কংগ্রেসকে অবহিত করেছেন।

কেনিয়ার মোম্বাসায় ২০০৭ সালে দেশটির কর্তৃপক্ষ আবদুল মালিক বাজাবুকে গ্রেফতার করে। কয়েক সপ্তাহ পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে আল-কায়েদার পূর্ব আফ্রিকার শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল।

গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দিদের থাকা না–থাকাসংক্রান্ত পর্যালোচনা পরিষদ ২০২১ সালে নির্ধারণ করে যে আবদুল মালিক বাজাবু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আর উল্লেখযোগ্য হুমকি নন। কাজেই তার হুমকি থেকে রক্ষারও আর প্রয়োজন নেই।

আবদুল মালিক বাজাবুর মুক্তিপ্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল ‘রিপ্রাইভ ইউএস’ নামের একটি সংগঠন। বাজাবুর মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। বলেছে, এই ব্যক্তি কেনিয়ার কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।

মুক্তিপ্রক্রিয়ায় আবদুল মালিক বাজাবুকে সহায়তা দেওয়া একজন আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, নিরীহ একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের সেরা সময়টায় বন্দি রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাকে এমন একটা সময়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল, যখন তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।

নাইন–ইলেভেনের হামলার পর তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ চলার সময় ২০০২ সালে এই গুয়ানতানামো বে কারাগার চালু হয়। কিউবার কাছে মার্কিন এক সামরিক ঘাঁটিতে এই কারাগার অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কমিশনের এক আইনি ব্যবস্থায় এটি পরিচালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত আদালতে যেসব সুযোগ–সুবিধা থাকে, সেখানে সেগুলো নেই।

এ কারাগারে বন্দীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যেখানে বিনা অভিযোগে অনেককে আটকে রাখা হয়। এমনকি কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা জানারও আইনি ক্ষমতা দেওয়া হয় না তাদের।

এই কারাগারে একসময় ৮০০ বন্দি ছিলেন। পেন্টাগনের হালনাগাদ তথ্য, এখন গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২৯ জন বন্দি আছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন স্থানান্তর করার মতো উপযুক্ত পর্যায়ে রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ‘কালো এলাকা’ হিসেবে পরিচিত সিআইয়ের গোপন ডেরায় থাকতেন। সেখানে তাদের ‘ব্যাপকমাত্রার জিজ্ঞাসাবাদ’–এর নামে নির্যাতন করা হতো। এই কার্যক্রম অনুমোদন করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরবর্তী সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে আইনি জটিলতা আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপে ওবামার এ উদ্যোগ সফল হতে পারেনি