আকাশ জাতীয় ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ঘাটতি মেটাতে স্থগিতাদেশ তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়ার এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (এমইএফ)।
ফেডারেশনটি বলছে, ব্যবসায় টিকিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নিতে হবে। ১১ ডিসেম্বর বুধবার এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানায় ৭ হাজার সদস্যের এ সংগঠনটি।
এমইএফের সভাপতি দাতুক ড. সৈয়দ হুসেন বলেছেন, বর্তমান শ্রমিক ঘাটতি আরও খারাপ হচ্ছে এবং খুব বিপদে ফেলছে।
বুধবার দেশটির দি-সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় কৃষি ও বৃক্ষরোপণ খাতে প্রায় ২৩০,০০০ শ্রমিক, ৩০০,০০০ নির্মাণ, ২০০,০০০ উৎপাদন এবং ১০০,০০০ পরিষেবা খাতে শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে।
এদিকে গত ১৯ নভেম্বর, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল বলেছেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদনের ওপর স্থগিতাদেশ ২০২৩ থেকে কমপক্ষে ২০২৫ এর প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত বজায় থাকবে।
তবে মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন এমইএফের সভাপতি সৈয়দ হুসেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, স্থবিরতা অব্যাহত থাকলে শ্রমিক সংকট আরও বাড়বে। আগে বিদেশি কর্মীদের প্রতিস্থাপন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল যাদের কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা যারা তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এখন, এটি অনুমোদিত নয়।
যদিও আমরা উন্নত প্রযুক্তিগত ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ এবং পুনঃ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমিকদের স্বয়ংক্রিয়করণ, যান্ত্রিকীকরণ, আপস্কিলিং এবং পুনঃ স্কিলিংয়ের মাধ্যমে কাজের প্রক্রিয়াগুলিকে উন্নত করার লক্ষ্যে সরকারি নীতিগুলিকে সমর্থন করি।
সৈয়দ হুসেন উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মালয়েশিয়ার বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৩.২%, যার মধ্যে প্রায় ৫৩০,০০০ লোক জড়িত। মালয়েশিয়ানরা যদি তাদের মানসিকতা পরিবর্তন না করে, তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে কোন পরিমাণ উন্নতি তাদের ত্রিডি চাকরিতে আকৃষ্ট করবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিদেশি কর্মীরা দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে, বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, ম্যানুয়াল বা নিম্ন-দক্ষ বিদেশি শ্রমিকদের ১০% নেট বৃদ্ধি মালয়েশিয়ার জিডিপি ১.১% বা ১৯.৪৮ বিলিয়ন রিঙ্গিত পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, চার বছরের নিষেধাজ্ঞার পর ২০২২ সালের ৯ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ থেকে ৫৩ জন কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও উন্মুক্ত হয়। এর সাত মাস পর দেশটির তৎকালীন মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ এক বিবৃতিতে জানান, বিদেশি কর্মীদের জন্য কোটার আবেদন ও অনুমোদন পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।