আকাশ জাতীয় ডেস্ক :
দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর লক্ষ্যে খসড়া নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে জনগণের মতামত চেয়েছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর এ পদক্ষেপ ব্যাকহোলিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহকের ডেটা ব্যবহারের পাশাপাশি ডিজিটাল বিভাজন দূর করে সেতুবন্ধনে নতুন দ্বার উন্মোচনে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে ইলন মাস্কের স্টারলিংক এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য কোম্পানির বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের পথ প্রশস্ত হতে পারে।
তবে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট নীতিমালা সম্পর্কে গণশুনানির আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। ১৭ নভেম্বর সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের স্বাক্ষর করা এ চিঠিটি বিটিআরসিতে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ও নতুন নতুন প্রযুক্তিগত সেবাকে আমরা সবসময় আমন্ত্রণ জানাই। যদি তা নাগরিকদের কল্যাণার্থে এবং গ্রাহকদের সাধ্য সামর্থ্য ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে করা হয়। একইসঙ্গে রাষ্ট্রের স্বার্থ ও নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন থাকে। পরিসংখ্যানে বাংলাদেশে ১৩ কোটি ২০ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হলেও বাস্তবতা অনেক কম। অর্থাৎ বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে, দেশে এখনো ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ইন্টারনেট ব্যবহারের বাইরে রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে একটি বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে।’
এ বৈষম্য নিরসনে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন চিঠিতে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে। এর মধ্যে রয়েছে, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক বিশেষ করে গ্রাহকের সাধ্য-সামর্থ্য বিবেচনা নিয়ে স্যাটেলাইটভিত্তিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করা। প্রতিটি সংযোগ থেকে ইন্টারনেট শেয়ারিং অর্থাৎ গ্রাহক থেকে গ্রাহক কতজন হবে বা কী পরিমাণ হবে-তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা। নাগরিকের ডেটা সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে-তা জনস্বার্থে জাতীয়ভাবে কমিশন ও স্টার্লিং স্যাটেলাইট কোম্পানিকে ঘোষণা দেওয়া ইত্যাদি।
চিঠিতে বলা হয়, ‘নীতিমালায় চাহিদামাত্র গ্রাহকের তথ্যে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং কমিশনকে প্রবেশ অধিকার চাওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবেই সংবিধান পরিপন্থি বলে আমরা মনে করি। তবে রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে কেবল আদালতের নির্দেশে কারও ব্যক্তিগত তথ্য নিতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা বিটিআরসি, অন্যথায় নয়। আমাদের দেশীয় নিয়মনীতি ও উদ্যোক্তারা যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই বিষয়টি সামনে রেখে নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক। আবার এটিও লক্ষ রাখতে হবে, এ নীতিমালায় বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা ইতোমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে, যার ফলে স্যাটেলাইটভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ হারাতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি, নীতিমালা সংশোধন প্রয়োজন রয়েছে।’