আকাশ জাতীয় ডেস্ক :
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ সরকার গত তিন মাসে কিছুই করতে পারেনি। তাদের সংস্কার কমিটিও কারো সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া কোনো সংস্কার সরকার চাপিয়ে দিতে পারবে না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তির জন্য লড়াই করতে গিয়ে আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা বীরোচিত অবদান রেখে গেছেন। তেমনি প্রবাসীরা যারা সর্বস্ব হারিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের স্বাচ্ছন্দ্যভাবে চলার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা করতে হবে।’
আন্দোলন এখনো চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের প্রথম ধাপ অতিক্রান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রথম ধাপের জয় পেয়েছি।মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার পর ভোট হবে। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা বলতে পারব, যে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক, কল্যাণ ও সহযোগিতামূলক সরকার গঠন করতে পারি। মিনিমাম একটা স্ট্যান্ডার্ড পুলিশ বাহিনী লাগবে ভোট করতে, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা লাগবে। একটা ইলেকশন কমিশন লাগবে, যারা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’
মান্না বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন বলতে শুধু পাঁচজন কমিশনার নয়; একদম তৃণমূল থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত ভোটে যারা সহযোগিতা করবে, নির্বাচনের ব্যাপারে তাকে পুনঃব্যবস্থা করতে হবে। একটা জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গঠন করতে হবে। বর্তমান পুলিশ কী পরিমাণ ঘুস খায় আর নির্যাতন করে, সেই পুলিশকে মানুষ বানাতে কত সময় লাগবে? সেই সময় দিতে আমরা রাজি আছি। আমরা একটা খারাপ পরিস্থিতিতে আছি। সেই পরিস্থিতি যারা দেশকে পরিচালনা করছেন, তারা দেশকে কতদূর সামনে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটা একটা বিতর্কিত বিষয়। কিন্তু একটা ভোট হতে হবে। আপনাকে এমন একটা সরকার গঠন করতে হবে, যিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনে যারা মারা গেছেন, তাদেরকে যথাযথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে পারেনি এই সরকার। আহতদেরকে চিকিৎসা করতে পারেনি। তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা যা করেছে সবকিছু এলোমেলো। দশটা কমিশন করেছে, গত তিন মাসে ওই কমিশন কিছুই করতে পারেনি। জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া কোনো সংস্কার সরকার চাপিয়ে দিতে পারবে না।’
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. শান্ত শাখাওয়াত, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।