আকাশ জাতীয় ডেস্ক :
ঢাকাসহ সারা দেশে হাসপাতালগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসকের পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) মাধ্যমে মানসিক চিকিৎসকদের ভূমিকা মূল্যায়নের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মেন্টাল হেলথ ২.০ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এসব দাবি জানান। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে জানানো হয় দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন। আঠারো বছরের বেশি যাদের বয়স, তাদের ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বিষন্নতা এবং ৪ দশমিক ৫ শতাংশ উদ্বেগজনিত রোগে ভুগছেন। তবে আক্রান্তদের ৯২ শতাংশেরও বেশি মানুষ বিজ্ঞানসম্মত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাননি বা নেননি। সেমিনারে বলা হয়, মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর স্বল্পতা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র-শয্যা-ওষুধ সংকট রয়েছে। বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ কম।
সরকারি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্যর জন্য আলাদা কোনো পদ নেই উলেখ করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান ডা. শাহেদুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় চিকিৎসকদের সেখানে সংযুক্ত করা হয়। সরকারি সব মেডিকেলে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আলাদা পদ তৈরি করা প্রয়োজন। তাহলে এই খাতে উন্নয়ন সম্ভব।
সেমিনারে ‘বাংলাদেশে আগামী দশকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার ডা. মো. তৈয়বুর রহমান। তিনি সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের জন্য প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কমিউনিটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং চিকিৎসার ওপর জোর দেন।
জুলাই গণহত্যায় আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থা এবং প্রয়োজনে বৈজ্ঞানিকভাবে মূল্যায়নের জন্য গবেষণা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের রেসিডেন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জোবায়ের মিয়া বলেন, আন্দোলনে আহত অনেক শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও এখনো মানসিক ট্রমায় ভুগছেন। তারা মিছিলের শব্দ শুনে ঘুমাতে পারেন না, ভয় পান। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি)-এর আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মোত্তালিব।
সূচনা বক্তব্য দেন বিএপির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সহ-সভাপতি ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং এনডিএফ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. সাজেদ আবদুল খালেক, এনডিএফ ঢাকা নর্থ সভাপতি ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সমাপনী বক্তব্য দেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মো. মুনতাসীর মারুফ। সেমিনারে বৈজ্ঞানিক সহযোগী ছিল হেলথ কেয়ার ফার্মা।