আকাশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
এক যুগ ধরে পেটের অসহনীয় ব্যথা নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছেন ভারতের সিকিম রাজ্যের এক নারী। দীর্ঘদিনের চিকিৎসার পরেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় ভোগান্তির শেষ ছিল না। মূলত ২০১২ সালে গ্যাংটকের স্যার থুটোব নামগিয়াল মেমোরিয়াল (এসটিএনএম) হাসপাতালে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণের সময় এক মারাত্মক ভুলের শিকার হন তিনি। অস্ত্রোপচারের পর তার পেটে একটি অস্ত্রোপচারের কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১২ বছর পর সেই কাঁচি পেটে থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
৪৫ বছর বয়সী ওই নারী প্রথমে ২০১২ সালে পেটের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেই সময় তাকে অ্যাপেন্ডিক্সের সমস্যা বলে জানানো হয় এবং অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, অপারেশনের পরও পেটের ব্যথা না কমায় বারবার চিকিৎসকের কাছে যেতে থাকেন তিনি। একাধিকবার চিকিৎসকেরা তাকে ওষুধ দিয়ে বিদায় করলেও তার সমস্যার মূল কারণ কেউই খুঁজে বের করতে পারেনি।
চলতি বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকে ব্যথা আরও তীব্র হলে আবারও তিনি একই হাসপাতালে যান। এবার এক্স-রে করানো হলে অবশেষে চাঞ্চল্যকর সত্যটি সামনে আসে। পেটের ভেতর প্রায় এক যুগ আগে করা অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকেরা কাঁচি রেখে দিয়েছিলেন, যা তার অসহনীয় ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ওই নারীর স্বামী জানান, অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তার স্ত্রীর পেটের ব্যথা থেকে যায় এবং এ নিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, কেউই এর সঠিক কারণ নির্ধারণ করতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর ফের একই হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করালে পেটে কাঁচির অস্তিত্ব মেলে। এরপর একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল দ্রুততার সাথে আরেকটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কাঁচিটি অপসারণ করেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং হাসপাতালের জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনাটি ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরেকটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে।