ঢাকা ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেণুকে পিটিয়ে হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

আকাশ জাতীয় ডেস্ক :

রাজধানীর বাড্ডায় পাঁচ বছর আগে ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

যাকে এই হত্যাকাণ্ডের হোতা বলেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেই ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালক।

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলাম।

দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

আর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির মধ্যে শাহিন, বাচ্চু মিয়া, বাপ্পি ওরফে শহিদুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বেল্লাল মোল্লা, রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন, মহিউদ্দিনকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ছেলেধরার গুজব নিয়ে দেশে যখন তোলপাড় চলছে, সেই সময় ২০ জুলাই ঢাকার উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তসলিমা রেনুকে পিটিয়ে মারা হয়। মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য খবর নিতে সেখানে গিয়েছিলেন ৪২ বছর বয়সী এই নারী।

মর্মস্পর্শী ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।

পরে বাদী বাড্ডা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও আসামি করতে চেয়ে আদালতে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেন। পরে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই আসামির বিরুদ্ধে দোষীপত্র দাখিল করেন।

২০২১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতিমা ইমরোজ ক্ষণিকা প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলা অভিযোগপত্রে ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়। এরমধ্যে ১৯ সাক্ষী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন।

একই বছর ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার দুই কিশোর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

রেনু লেখাপড়া শেষে আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছেন। স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৭ সালে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। রেনুর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে।

রেনুর দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে হসিন আল মাহির এখন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ছে। সে থাকে হোস্টেলে। আর তার ৯ বছরের বোন তাসমিন মাহিরা তুবা থাকে খালা নাজমুন নাহার নাজমার কাছে। মহাখালীর শিশুমেলা স্কুলে পড়ছে সে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব এশিয়া কাপ জয়ীদের মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দেবে বিসিবি

রেণুকে পিটিয়ে হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

আপডেট সময় ০৩:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

আকাশ জাতীয় ডেস্ক :

রাজধানীর বাড্ডায় পাঁচ বছর আগে ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

যাকে এই হত্যাকাণ্ডের হোতা বলেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেই ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালক।

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলাম।

দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

আর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির মধ্যে শাহিন, বাচ্চু মিয়া, বাপ্পি ওরফে শহিদুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বেল্লাল মোল্লা, রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন, মহিউদ্দিনকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ছেলেধরার গুজব নিয়ে দেশে যখন তোলপাড় চলছে, সেই সময় ২০ জুলাই ঢাকার উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তসলিমা রেনুকে পিটিয়ে মারা হয়। মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য খবর নিতে সেখানে গিয়েছিলেন ৪২ বছর বয়সী এই নারী।

মর্মস্পর্শী ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।

পরে বাদী বাড্ডা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও আসামি করতে চেয়ে আদালতে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেন। পরে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই আসামির বিরুদ্ধে দোষীপত্র দাখিল করেন।

২০২১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতিমা ইমরোজ ক্ষণিকা প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলা অভিযোগপত্রে ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়। এরমধ্যে ১৯ সাক্ষী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন।

একই বছর ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার দুই কিশোর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

রেনু লেখাপড়া শেষে আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছেন। স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৭ সালে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। রেনুর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে।

রেনুর দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে হসিন আল মাহির এখন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ছে। সে থাকে হোস্টেলে। আর তার ৯ বছরের বোন তাসমিন মাহিরা তুবা থাকে খালা নাজমুন নাহার নাজমার কাছে। মহাখালীর শিশুমেলা স্কুলে পড়ছে সে।