ঢাকা ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে সচেতন নয়: পিটার হাস

আকাশ জাতীয় ডেস্ক:  

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই আরও ভালোভাবে জানতে হবে যে, তাদের জন্য বাংলাদেশে কী ধরনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশকে অবশ্যই আমেরিকান ব্যবসাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

কেননা মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে একদমই সচেতন নয়।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

পিটার হাস বলেন, আমরা দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিকতা কমানো, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং অর্থনৈতিক শাসনকে শক্তিশালী করার আইবিএফবি-এর লক্ষ্যগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করার এই সময়ে আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাঁচটি মূল উদ্দেশ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করছি। প্রথমত, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ত, এমন একটি বাংলাদেশ যা গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, বহুত্ববাদ, সহনশীলতা, সুশাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তৃতীয়ত, সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সহনশীল বাংলাদেশ। চতুর্থত, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা, যতক্ষণ পর্যন্ত বার্মায় তাদের নিরাপদ, ঐচ্ছিক এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হয়।

পিটার হাস আরও বলেন, প্রথম চারটি লক্ষ্যের প্রতিটি লক্ষ্য আমাদের পঞ্চম লক্ষ্যের ভিত্তি: টেকসই এবং বিস্তৃত পরিসরে পারস্পরিক সমৃদ্ধি অর্জন, শ্রম মানের উন্নয়ন, অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং বৈচিত্র্যময়করণের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করা এবং এটিকে বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য উন্মুক্ত করা।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে আমি নিশ্চিত যে, আমরা অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে আরো দ্রুততার সাথে বহুদূর যেতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ। আর আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসায়ী এই অঞ্চলে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী এবং আমরা বাংলাদেশকে এমন একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করতে চাই, যা বিদেশি বিনিয়োগ যথাসম্ভব স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হবে। আমরা আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি তার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ।

পিটার হাস বলেন, বেশির ভাগ আমেরিকান কোম্পানির প্রধানরা সকালে একথা ভেবে ঘুম থেকে উঠেন না যে, ‘হুম— আমার বোধহয় বাংলাদেশে ব্যবসা করা উচিত’। তারা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। তারা যদি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে বলা যায় তারা সেখানেই ব্যবসা করতে যাবেন যেখানকার বাজার তারা বোঝেন। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে একদমই সচেতন নয়। তবে এই গ্রুপের সদস্যরা জানেন যে, বাজার খুঁজে পাওয়ার সুযোগ নিতে বাংলাদেশের দিকে তাকানোর জোরালো কারণ রয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ তাদের মনোযোগ আকর্ষণের যোগ্য।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে সচেতন নয়: পিটার হাস

আপডেট সময় ০৯:২৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

আকাশ জাতীয় ডেস্ক:  

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই আরও ভালোভাবে জানতে হবে যে, তাদের জন্য বাংলাদেশে কী ধরনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশকে অবশ্যই আমেরিকান ব্যবসাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

কেননা মার্কিন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে একদমই সচেতন নয়।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

পিটার হাস বলেন, আমরা দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিকতা কমানো, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং অর্থনৈতিক শাসনকে শক্তিশালী করার আইবিএফবি-এর লক্ষ্যগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করার এই সময়ে আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাঁচটি মূল উদ্দেশ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করছি। প্রথমত, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ত, এমন একটি বাংলাদেশ যা গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, বহুত্ববাদ, সহনশীলতা, সুশাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তৃতীয়ত, সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সহনশীল বাংলাদেশ। চতুর্থত, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা, যতক্ষণ পর্যন্ত বার্মায় তাদের নিরাপদ, ঐচ্ছিক এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হয়।

পিটার হাস আরও বলেন, প্রথম চারটি লক্ষ্যের প্রতিটি লক্ষ্য আমাদের পঞ্চম লক্ষ্যের ভিত্তি: টেকসই এবং বিস্তৃত পরিসরে পারস্পরিক সমৃদ্ধি অর্জন, শ্রম মানের উন্নয়ন, অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং বৈচিত্র্যময়করণের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করা এবং এটিকে বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য উন্মুক্ত করা।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে আমি নিশ্চিত যে, আমরা অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে আরো দ্রুততার সাথে বহুদূর যেতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ। আর আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসায়ী এই অঞ্চলে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী এবং আমরা বাংলাদেশকে এমন একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করতে চাই, যা বিদেশি বিনিয়োগ যথাসম্ভব স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হবে। আমরা আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি তার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ।

পিটার হাস বলেন, বেশির ভাগ আমেরিকান কোম্পানির প্রধানরা সকালে একথা ভেবে ঘুম থেকে উঠেন না যে, ‘হুম— আমার বোধহয় বাংলাদেশে ব্যবসা করা উচিত’। তারা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। তারা যদি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে বলা যায় তারা সেখানেই ব্যবসা করতে যাবেন যেখানকার বাজার তারা বোঝেন। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে একদমই সচেতন নয়। তবে এই গ্রুপের সদস্যরা জানেন যে, বাজার খুঁজে পাওয়ার সুযোগ নিতে বাংলাদেশের দিকে তাকানোর জোরালো কারণ রয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ তাদের মনোযোগ আকর্ষণের যোগ্য।