আকাশ জাতীয় ডেস্ক:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়ায় বিএনপির মিছিলে অংশ নেওয়ায় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাউশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আল মামুন প্রধানের বিরুদ্ধে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হুমকি দেওয়ার তিনটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠেছে গোটা এলাকায়।
ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, থানার ওসি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নামে হুমকি দিচ্ছেন তিনি। বলছেন- কর্মসূচির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বিএনপির কোনো নেতা বের হলে তার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।
খবর নিয়ে জানা যায়, রোববার দুপুর ১২টায় বাউশিয়া ইউনিয়নের চর বাউশিয়া, পশ্চিমকান্দি এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি যান ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আল মামুন।
এদিকে ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বিএনপি নেতাকর্মীর বাড়ির কাছে গিয়ে বলছেন, ওসি সাহেব, চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতারা আমাকে পাঠিয়েছেন হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য। কেউ গ্রাম থেকে বের হলে পেটানো হবে শুধু। আপনাদের বাসার লোকজনদের বলে গেলাম। যদি আওয়ামী লীগের মিটিং-মিছিল হয়, যদি তার সামনে কেউ পড়ে তাহলে মনে করেন সে শেষ। জাতীয় নির্বাচনের আগে যেন কেউ বাড়িতে না থাকে। তা না হলে তাদের অবস্থা সিরিয়াস করে দেব।
যাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন আল মামুন মেম্বার তাদের মধ্যে গজারিয়া উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক রাজিব বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় ইউপি সদস্য আল মামুনসহ ৭-৮ জন লোক আসেন। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। বাসায় এসে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি ইউপি সদস্য মামুন আমাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমার রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সকালে বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলাম। এ কারণে সে আমার বাড়িসহ এলাকার আরও ৪-৫টি বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে। কারণ আমরা বিএনপি করি।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু বলেন, রোববার আমরা দ্রব্যমূল্য, তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। এখন সরকারি দলের নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আল মামুন বলেন, সরকারকে ক্ষমতায় রাখার জন্য যা দরকার হয় তাই করব। যদি কেউ রাস্তায় বের হয় তাহলে মামলা তো হবেই পাশাপাশি পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলব। সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে সাইজ করে ফেলব। এ কথা সবার সামনেই বলেছি।
এদিকে এ বিষয়ে বাউশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সারোয়ার বিপ্লব বলেন, রোববার দিন আমাদের ইউনিয়নে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ছিল। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা যাতে কোনোরকম নাশকতা করতে না পারে সেজন্য দড়ি বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তবে অবস্থান কর্মসূচিতে আল মামুন মেম্বারকে দেখা যায়নি। তিনি কয়েকজন বিএনপি নেতার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে নিজের লোক মারফত সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল হতে চেয়েছিলেন। তার এ বক্তব্য একান্ত তার ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।