আকাশ জাতীয় ডেস্ক:
পরকীয়া প্রেমের টানে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় এসেছিলেন গৃহবধূ লায়লা নুর মজুমদার (২৪)। সেখানে এসে প্রথমে প্রেমিক ও তার বন্ধুর গণধর্ষণের শিকার হন তিনি। পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কামাল হোসেনের কাছে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এসব কথা বলেন নিহতের পরকীয়া প্রেমিক সোহাগ হেসেন (২৭)। গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোহাগ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। তার সহযোগী রফিকের বাড়িও একই এলাকায়। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি শিপন জানান, গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রায়পুর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরপলোয়ান গ্রামের গনি মিয়ার মালিকানাধীন একটি সুপারি বাগানে অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অল্প সময়ের মধ্যেই নিহতের পরিচয় শনাক্ত হয়। এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামি সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে সোহাগকে তোলার পর বিচারক জবানবন্দী গ্রহণের পর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওসি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করার পর সোহাগকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২০ আগস্ট) তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তিনি নিজের দায় স্বীকার করেন।
আসামির বর্ণনায় গণধর্ষণ ও হত্যা-
সোহাগের সঙ্গে নিহত লায়লার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের খাতিরে সোহাগের সঙ্গে ঘর ছাড়েন লায়লা। বন্ধু রফিকের প্রলোভনে নিজের প্রেমিকাকে রায়পুর নিয়ে আসেন। সেখানে রফিকের মামার বাসায় ওঠেন দুজন। সেখানে সোহাগ ও লায়লা শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। এ ঘটনা দেখে রফিকের মামি দুজনকে ঘর থেকে বের করে দেন। সেখান থেকে ফেরার সময় সোহাগ ও লায়লাকে গনি মিয়ার নামে এ স্থানীয়ের সুপারি বাগানের ভেতরে নিয়ে আসেন। সেখানে দুজন মিলে লায়লাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর রফিক লায়লার মরদেহ ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি ১৬ আগস্ট রাত ৮টার দিকে ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লায়লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের আবুল কাশেম মজুমদারের মেয়ে। একই এলাকার দুবাই প্রবাসী আরিফুর রহমান তার স্বামী।
গত ১৬ আগস্ট লায়লা ঘরে থেকে বের হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা তাকে নিখোঁজ বলে ধরে নেন। পরে রায়পুরে তার মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পায় পরিবার। এ ঘটনায় লায়লার বাবা আবুল কাশেম বাদি হয়ে রায়পুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আবুল কাশেম জানান, প্রায় ৫/৬ বছর আগে তার মেয়ে লায়লার বিয়ে হয়। তার মেয়ে বাবা ও স্বামীর বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। গত ১৬ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তিনি চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর বাজারের একটি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ ঘরে না আসার তাকে ব্যাপক খোঁজা হয়। কিন্তু কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। মেয়ে হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন আবুল কাশেম।