ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত আ.লীগ নেতারা ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন আমরা ছাত্র-জনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে চাই : ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা তা সম্পূর্ণরূপে জনগণের সিদ্ধান্ত: মির্জা ফখরুল ফ্যাসিস্টদের মতো কারও কথা বলার অধিকার হরণ করা হবে না : প্রেস সচিব আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উদ্যোক্তা তৈরির পরিবর্তে চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ রাজধানীর দয়াগঞ্জে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ দুধ দিয়ে গোসল করে ৩৫ আন্দোলন থেকে সরে গেলেন আহ্বায়ক শুভ গণহত্যার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ৮ কর্মকর্তাকে

বাল্যবিয়ে করতে গিয়ে গণধোলাই খেলেন খাদ্য কর্মকর্তা

আকাশ জাতীয় ডেস্ক: 

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাল্য বিয়ে করতে এসে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ (৫৪)। অভিযুক্ত কর্মকর্তা দিনাজপুর সদরের সুইহারী (খালপাড়া) গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বলে জানা যায়। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামে এ কর্মকর্তা এ ঘটনা ঘটে। পরে জনতার রোষানল থেকে তাকে রৌমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা জানান, ওই খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতি সনদ দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতে আসেন। এরপর তাকে গণধোলাই দেয়া হয়। শৌলমারী ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইউনূছ আলী জানান, বিগত ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শৌলমারী এমআর স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ। এর সুবাদে পরীক্ষা কেন্দ্রেই পরিচয় হয় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে।

পরে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল নম্বরও নেন ওই কর্মকর্তা। এরপর বিভিন্ন সময়ে মোবাইলে কল দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন তিনি। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তিন সদস্যের বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হন ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে। বিধি মোতাবেক প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতির প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসে তিনি বিয়ের কাজে বসেন। তার সঙ্গে আসা দুই খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান এবং নাগেশ্বরী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা বিয়ের সাক্ষী হতে রাজি হননি।

এমনকি তার কোনো স্বজনও আসেননি এবং ওই শিক্ষার্থীর ১৮ বছর বিয়ের বয়স না হওয়ায় বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়দের রোষানলে পড়ে একপর্যায় তাকে গণধোলাই খেতে হয়। পরে খবর পেয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু এসে তাকে উদ্ধার করে অন্যত্র প্রেরণ করেন।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু বলেন, ওই কর্মকর্তা বিয়ে করতে এসে জনতার রোষানলের শিকার হয়েছেন। পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার স্ত্রী কামরুন আরার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তাদের ঘরে দুই কন্যা সন্তান ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এক মেয়ের বিয়েও দেওয়া হয়েছে। আরেক মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এবং ছেলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, তার স্বামী কিছু দিন ধরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন এবং বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। এ নিয়ে দিনাজপুর থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ বলেন, আমার প্রথম স্ত্রীর দু’টি অপারেশনের কারনে সে শারীরিকভাবে অপারগ। ফলে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে আসছি। মেয়ের বয়স কম, এটা আমার জানা ছিল না। তাই একটু হট্টগোল হয়েছে। বুধবার আদালতের মাধ্যমে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার ইচ্ছা ছিল বলেও জানান তিনি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশকে হারিয়ে শেষটা রাঙাতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ

বাল্যবিয়ে করতে গিয়ে গণধোলাই খেলেন খাদ্য কর্মকর্তা

আপডেট সময় ০৭:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২

আকাশ জাতীয় ডেস্ক: 

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাল্য বিয়ে করতে এসে জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ (৫৪)। অভিযুক্ত কর্মকর্তা দিনাজপুর সদরের সুইহারী (খালপাড়া) গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বলে জানা যায়। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামে এ কর্মকর্তা এ ঘটনা ঘটে। পরে জনতার রোষানল থেকে তাকে রৌমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা জানান, ওই খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতি সনদ দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ফুসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করতে আসেন। এরপর তাকে গণধোলাই দেয়া হয়। শৌলমারী ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইউনূছ আলী জানান, বিগত ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শৌলমারী এমআর স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ। এর সুবাদে পরীক্ষা কেন্দ্রেই পরিচয় হয় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর সঙ্গে।

পরে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল নম্বরও নেন ওই কর্মকর্তা। এরপর বিভিন্ন সময়ে মোবাইলে কল দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন তিনি। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তিন সদস্যের বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হন ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে। বিধি মোতাবেক প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতির প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসে তিনি বিয়ের কাজে বসেন। তার সঙ্গে আসা দুই খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান এবং নাগেশ্বরী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা বিয়ের সাক্ষী হতে রাজি হননি।

এমনকি তার কোনো স্বজনও আসেননি এবং ওই শিক্ষার্থীর ১৮ বছর বিয়ের বয়স না হওয়ায় বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়দের রোষানলে পড়ে একপর্যায় তাকে গণধোলাই খেতে হয়। পরে খবর পেয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু এসে তাকে উদ্ধার করে অন্যত্র প্রেরণ করেন।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু বলেন, ওই কর্মকর্তা বিয়ে করতে এসে জনতার রোষানলের শিকার হয়েছেন। পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার স্ত্রী কামরুন আরার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তাদের ঘরে দুই কন্যা সন্তান ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এক মেয়ের বিয়েও দেওয়া হয়েছে। আরেক মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এবং ছেলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, তার স্বামী কিছু দিন ধরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেন এবং বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। এ নিয়ে দিনাজপুর থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত রাণী শংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ইসকে আব্দুল্লাহ বলেন, আমার প্রথম স্ত্রীর দু’টি অপারেশনের কারনে সে শারীরিকভাবে অপারগ। ফলে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে আসছি। মেয়ের বয়স কম, এটা আমার জানা ছিল না। তাই একটু হট্টগোল হয়েছে। বুধবার আদালতের মাধ্যমে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার ইচ্ছা ছিল বলেও জানান তিনি।