আকাশ স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে ২২ বছর আগে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পূর্বশর্ত ছিল আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করা।
বর্তমান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান নয় বছর আগে জানিয়েছিলেন তার প্রধান চ্যালেঞ্জ আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন। তৃতীয়বার বিসিবির সভাপতি হওয়ার পর অবশেষে মঙ্গলবার বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ক্রিকেটের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অনুমোদন মিলল।
এর ফলে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনে আর কোনো বাধা রইল না। তবে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলা হলেও মূল ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রে। অনুমোদন হতেই যেখানে নয় বছর পার হয়ে গেছে, বাস্তবায়ন হতে কত সময় লাগবে কে জানে?
এজিএমের আগের দিন কাউন্সিলররা ঢাকায় আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে আলোচনা শুরু হয়। দ্রুত সবকিছু অনুমোদন হয়ে যায়। একই সঙ্গে বিসিবির নির্বাচনে ঢাকার সব ক্লাব সমান ভোট দেওয়ার অধিকার পাচ্ছে। শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়- প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের সব ক্লাবকে ভোটের অধিকার দেওয়া হচ্ছে। ক্রিকেটারদের পাশে থাকতে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) নামে একটি সংগঠন রয়েছে। যার মাধ্যমে শুধু ক্রিকেটারদের সহায়তা প্রদান, তাদের উন্নয়ন ও অংশগ্রহণে নানা কাজ করা হয়। এবার বিসিবি ওয়েলফেয়ার কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে। তাদের কাজ হবে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের সহায়তা করা।
আটটি বিভাগ হলেও ময়মনসিংহ আপাতত বিকেন্দ্রীকরণের আওতায় আসছে না। তাই সাতটি বিভাগ নিয়েই শুরু হচ্ছে পথচলা। ২০১২ সালের এজিএমে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ২০১৮ সালে এজিএমে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এরপর গত বছর এজিএমে খসড়া ওঠার পর চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় চলে যায়। বিসিবির গঠনতন্ত্রের ৯.১(ক) ধারায় যুক্ত করা হয়েছে এই ধারা।
তারপরও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কাঠামো এবং কর্মপরিধি চূড়ান্ত করার আগেই তা নির্ধারণের জন্য বিসিবির পরিচালনা পরিষদের ওপর ন্যস্ত করেছে সাধারণ পরিষদ। জাতীয় ক্রিকেট লিগে ময়মনসিংহ না থাকায় আঞ্চলিক সংস্থায় নেই তারা।
এজিএম শেষে সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান বলেন, গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা অনুমোদন হয়ে গেল। এখন আর কোনো বাধা রইল না। পরবর্তী বোর্ডসভার আগেই আমরা এটা করে ফেলব আশা করছি।
তিনি বলেন, কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিসিবি থেকে একটা নির্দেশনা দেওয়া হবে। বড় বিভাগে ১৭ জন এবং ছোট বিভাগে ১১ জন কাউন্সিলর রাখার কথা বলা হয়েছে। আপাতত অস্থায়ী কমিটি তৈরি করা হবে। পরবর্তীতে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা।
এদিকে ঢাকা লিগে আম্পায়ারদের নিয়ে বিতর্ক আছে সেটা মানতেই রাজি নন বিসিবি সভাপতি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগে ওঠা দলগুলো দুটি কাউন্সিলরশিপ পেতেন। এখন থেকে ঢাকা লিগে ১২টি দলই একটি করে কাউন্সিলরশিপ পাবে। নাজমুল হাসান সভাপতি হওয়ার পর ২০১২ সালে সুপার লিগের দলগুলোতে দুটি করে কাউন্সিলরশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বিসিবি সভাপতি বলেন, এজিএমে পাশ হয়েছে, আমরা প্রতিটি ক্লাবকে সমানসংখ্যক কাউন্সিলরশিপ দেব। আমরা চেয়েছিলাম সবাই যেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দৌড়ায়। এখন দেখা যায় সব দলই প্রায় সমান শক্তিশালী। এজন্যই সব ক্লাবকে সমান কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এছাড়া দুটি অতিরিক্ত কমিটি- বাংলাদেশ টাইগার্স ও ওয়েলফেয়ার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশ টাইগার্সের কার্যক্রম চলবে। ওয়েলফেয়ার কমিটির কাজ হবে কারও কোনো সমস্যা হলে, সহায়তা দরকার হলে এই কমিটির মাধ্যমে তা দেওয়া হবে।