আকাশ জাতীয় ডেস্ক:
বাঙালি সংস্কৃতিতে সতিনকে শত্রু হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়। সবাই মনে করে সতিনের সংসার মানেই ঝগড়া বিবাদের পরিবার। কিন্তু আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক ভিন্ন রকম দৃষ্টান্ত দেখা গেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায়। নির্বাচনে একটি ইউনিয়নে একজন মহিলা সদস্য প্রার্থীর প্রচারণায় নেমেছেন অপর দুই সতিন।
আগামী ২৮ নভেম্বর আটোয়ারী উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের ৪, ৫ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করবেন ওই এলাকার মৎস্য চাষি দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শাহিনা বেগম।
দেলোয়ার হোসেনের আরও দুই স্ত্রী রয়েছে। তারা হলেন-আকলিমা বেগম ও রত্না বেগম। এখনো মনোনয়ন দাখিল করেননি শাহিনা বেগম। কিন্তু তাতে কি? স্বামী দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে তিন সতিন নেমেছেন ভোটের প্রচারণায়। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন তারা। শাহিনাকে নির্বাচনে জেতাতে পুরোদমে বিরামহীন কাজ করছেন দুই সতিন।
তারা বলছেন, সম্পর্কে সতিন হলেও এক স্বামীর সঙ্গে বোনের মতোই বসবাস করছেন তারা। তাই প্রচারণায় তিন সতিন একত্রিত হয়ে দিনরাত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন ও দোয়া চাইছেন। প্রতিদিন সকালে তিন সতিন স্বামী দেলোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগে বের হন। তিন সতিনের একই সঙ্গে গণসংযোগের বিষয়টি ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
মেজো সতিন আকলিমা বেগম জানান, আমার স্বামী মোট তিনটি বিয়ে করেছে। সবাই আমরা একসাথে বসবাস করি। এবারের ইউপি নির্বাচনে আমার আপা (বড় সতিন।) ভোটে নেমেছে। তাই তাকে জয়যুক্ত করতে আমরা একত্রিত হয়ে প্রচারণা করছি।
ছোট সতিন রত্না বেগম বলেন, আমরা তিন সতিন মিলে স্বামীকে নিয়ে গণসংযোগ করছি। সবাই বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছে। ইতিমধ্যে অনেক সারা পেয়েছি।
প্রার্থী শাহিনা বেগম বলেন, সুখে-দুঃখে আমরা তিন সতিন একে অপরের পাশে দাঁড়াই। এবারের নির্বাচনে অপর দুই সতিন ও স্বামীর পরামর্শে নির্বাচনে অংশ নেবো। মানুষের মাঝে নিজেকে পরিচিত করতে সকলের কাছে গিয়ে দোয়া চাচ্ছি।
স্বামী মৎস্য চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, তাদের পরিবারে এক মেয়ে ও তিন ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রীরা বৈঠক করে হাসি মুখে সমর্থন দেন শাহিনা বেগমকে। আমার প্রথম স্ত্রী শাহিনা বেগমের জনসমর্থন রয়েছে। স্থানীয় ও ভোটাররা আমাদের পাশে রয়েছে। ইনশাল্লাহ আমরা জয়ি হবো।