আকাশ জাতীয় ডেস্ক:
রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার মেডিকেল সদর এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া খাতুন। রাবেয়ার মেয়ে তানিয়া। বিয়ের পর তানিয়ার গর্ভে সন্তান আসে। কিন্তু সন্তান প্রসবের আগেই স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কিন্তু মা রাবেয়ার সামর্থ্য ছিল না সন্তানের চিকিৎসা নির্বাহ করার।
তাই নিজ কন্যা তানিয়ার চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে নাতি জন্ম হওয়ার আগেই হারুন নামে একজনের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে বিক্রির জন্য মৌখিক চুক্তি করেন। হারুনের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। দাম নির্ধারণের পর তানিয়ার চিকিৎসাসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয়ের জন্য হারুনের কাছ রাবেয়া ৫৭ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। হারুন নিজের নিঃসন্তান বোন মনোয়ারা বেমের জন্য ছেলেটি ক্রয় করতে চাইছিলেন।
জানা যায়, গত ২ অক্টোবর তানিয়া ছেলে সন্তান প্রসব করেন। জন্মের পর অসুস্থ হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তানিয়ার মা নবজাতক নাতিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেখে তানিয়াকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার সকালে নবজাতককে হাসপাতাল থেকে চুরি করে নিয়ে হন্তান্তর করেন হারুন ও তার বোন মনোয়ারা বেগমের হাতে। ওই দিন বিকেলেই তানিয়া হাসপাতালে ফিরে এসে তার সন্তানের খোঁজ করলে মা রাবেয়া বেগম অসংলগ্ন তথ্য দেন। নবজাতক চুরি হয়েছে এমন তথ্য জানানোর পর তানিয়া পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার ও তিনজনকে গ্রেফতার করে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, মামলা হওয়ার পর পুলিশ নবজাতক উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এই সময় তানিয়ার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি নবজাতক বিক্রির তথ্য দিয়ে বলেন, গর্ভাবস্থায় তানিয়া স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের প্রয়োজনে হারুনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৫৭ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
হারুন তার নিঃসন্তান বোনের জন্য নবজাতক ক্রয় করেছিলেন। এরপর পুলিশ মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মনোয়ারা বেগমের বাসায় অভিযান চালিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে তানিয়ার কোলে ফিরিয়ে দেয়। এই মামলায় তানিয়ার মা রাবেয়া খাতুন, নিঃসন্তান নারী মনোয়ারা বেগম ও তার ভাই মোহাম্মদ হারুনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।