ঢাকা ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উত্তেজনাকর সেই ভুয়া ছবি

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ফেসবুকে গত কয়েকদিন এক নারীর পরনের শাড়ি ধরে টানছেন এমন দৃশ্য ছোটে দ্রুত গতিতে। নারীর ওপর সহিংসতার সেই দৃশ্য মানতে পারছিলেন না অনেকেই। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের। কিছুদিন আগে রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনায় সহিংসতায় একজন নিহত হওয়ার পর একটি ছবি পোস্ট হয় ফেসবুকে। তাই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। বাধ্য হয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। এরপর আস্তে-আস্তে বেরিয়ে আসে সেই ছবির আসল কাহিনী।

ছবিতে দেখা যায়, এক নারীর পরনের শাড়ি ধরে টানছেন সাদা শার্ট পরা এক লোক। পাশে অস্ত্রহাতে দাঁড়িয়ে একজন। টুপি মাথায় একটু দূরে আরেকজন। একটি মাক্রোবাসও রাখা পাশে। আর অদূরেই নারী নিগ্রহের সেই ঘটনা দেখছেন কিছু মানুষ; যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

ছবিটি ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়ে যায় বিবেককে। কেউ কেউ সেটি শেয়ার করে ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। সবাই ধরে নেন; উত্তর ২৪ পরগনাতেই নারী নিগ্রহের এমন ঘটনা ঘটেছে। দেখা দেয় চরম উত্তেজনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে তদন্তে নামে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তদন্ত করে তারা জানতে পারে, ছবিটি উত্তর ২৪ পরগনার নয়, এটি আসলে একটি সিনেমার দৃশ্য।

রাজ্য পুলিশ বলছে, যে ছবি ফেসবুকে ছাড়ানো হয়েছে সেটি ভুয়া। নারীর ওপর অত্যাচারের সেই ছবি আসলে `ভোজপুরি` নামে একটি সিনেমার স্থিরচিত্র। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৪ সালে। সেটি পোস্ট দিয়েই নারীর ওপর অত্যাচারের গুজব ছড়ানো হয়।

পরে পুলিশ মিথ্যা ছবি প্রচার করে উত্তেজনা ছাড়ানোর অভিযোগে ভবতোষ চট্টোপাধ্যায় নামে একজনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত ভবতোষকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে ১১ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

ভবতোষের বিরুদ্ধে বাদুড়িয়া ও বাসিরহাট সহিংসতায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এরআগে গত সোমবার এক তরুণ নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর একটি পোস্ট দেওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাদুড়িয়া ও বাসিরহাট এলাকায় হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ফেসবুকে ভবতোষের পোস্ট করা ছবি সেই উত্তেজনাকে উসকে দেয়।

মমতা বলেন যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

যুব এশিয়া কাপ জয়ীদের মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দেবে বিসিবি

উত্তেজনাকর সেই ভুয়া ছবি

আপডেট সময় ১১:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ফেসবুকে গত কয়েকদিন এক নারীর পরনের শাড়ি ধরে টানছেন এমন দৃশ্য ছোটে দ্রুত গতিতে। নারীর ওপর সহিংসতার সেই দৃশ্য মানতে পারছিলেন না অনেকেই। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের। কিছুদিন আগে রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনায় সহিংসতায় একজন নিহত হওয়ার পর একটি ছবি পোস্ট হয় ফেসবুকে। তাই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। বাধ্য হয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। এরপর আস্তে-আস্তে বেরিয়ে আসে সেই ছবির আসল কাহিনী।

ছবিতে দেখা যায়, এক নারীর পরনের শাড়ি ধরে টানছেন সাদা শার্ট পরা এক লোক। পাশে অস্ত্রহাতে দাঁড়িয়ে একজন। টুপি মাথায় একটু দূরে আরেকজন। একটি মাক্রোবাসও রাখা পাশে। আর অদূরেই নারী নিগ্রহের সেই ঘটনা দেখছেন কিছু মানুষ; যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

ছবিটি ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়ে যায় বিবেককে। কেউ কেউ সেটি শেয়ার করে ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। সবাই ধরে নেন; উত্তর ২৪ পরগনাতেই নারী নিগ্রহের এমন ঘটনা ঘটেছে। দেখা দেয় চরম উত্তেজনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে তদন্তে নামে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তদন্ত করে তারা জানতে পারে, ছবিটি উত্তর ২৪ পরগনার নয়, এটি আসলে একটি সিনেমার দৃশ্য।

রাজ্য পুলিশ বলছে, যে ছবি ফেসবুকে ছাড়ানো হয়েছে সেটি ভুয়া। নারীর ওপর অত্যাচারের সেই ছবি আসলে `ভোজপুরি` নামে একটি সিনেমার স্থিরচিত্র। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৪ সালে। সেটি পোস্ট দিয়েই নারীর ওপর অত্যাচারের গুজব ছড়ানো হয়।

পরে পুলিশ মিথ্যা ছবি প্রচার করে উত্তেজনা ছাড়ানোর অভিযোগে ভবতোষ চট্টোপাধ্যায় নামে একজনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত ভবতোষকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে ১১ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

ভবতোষের বিরুদ্ধে বাদুড়িয়া ও বাসিরহাট সহিংসতায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এরআগে গত সোমবার এক তরুণ নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর একটি পোস্ট দেওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাদুড়িয়া ও বাসিরহাট এলাকায় হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ফেসবুকে ভবতোষের পোস্ট করা ছবি সেই উত্তেজনাকে উসকে দেয়।

মমতা বলেন যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।