ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত আ.লীগ নেতারা ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন আমরা ছাত্র-জনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে চাই : ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা তা সম্পূর্ণরূপে জনগণের সিদ্ধান্ত: মির্জা ফখরুল ফ্যাসিস্টদের মতো কারও কথা বলার অধিকার হরণ করা হবে না : প্রেস সচিব আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উদ্যোক্তা তৈরির পরিবর্তে চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ রাজধানীর দয়াগঞ্জে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ দুধ দিয়ে গোসল করে ৩৫ আন্দোলন থেকে সরে গেলেন আহ্বায়ক শুভ গণহত্যার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ৮ কর্মকর্তাকে

আগামী ১ মাসে কি ঘটতে যাচ্ছে !!

আকাশ জাতীয় ডেস্ক:

সবদিক থেকে বাংলাদেশে আগামী ১ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ১ মাসে সবকিছুই ঘটতে পারে বাংলাদেশে। এমন ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই করোনার সঙ্গে বসবাসের ঝুঁকি নিচ্ছে। আগামী রোববার থেকে সবকিছুই খুলে দেওয়া হচ্ছে। কাজেই পুরো জুন মাসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আমরা যদি দেখি যে, আগামী ১ মাসে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা কি ধরণের পূর্বাভাস দিচ্ছেন, তাহলেই পুরো সময়টার গুরুত্বটা আমরা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবো।

জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কি ঘটতে পারে?

জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা অনেকগুলো শঙ্কার পূর্বাভাস দিচ্ছেন, এই পূর্বাভাসগুলো হচ্ছে-

১. করোনা রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়বে এবং জটিল অবস্থার রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বাংলাদেশ হার্ড ইমিউনিটির দিকে যেতে পারে।

২. করোনা রোগীদের মধ্যে যারা একদম ক্রিটিক্যাল রোগী। যাঁদের আইসিইউ দরকার, ভেন্টিলেশন দরকার এমন রোগীদের জায়গা দেওয়া যাবেনা। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা হবে, বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়েই মারা যেতে পারে।

৩. শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসা নয়, হাসপাতালগুলো যখন অন্যান্য রোগী দিয়ে ভর্তি হয়ে যাবে তখন করোনা রোগীর চিকিৎসা করা দুরূহ বা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনী রোগের যাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন আছে, তাঁদের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে যেতে পারে।

৪. অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে যা হবে, আমাদের সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি সঙ্কটে পড়বে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কার মূল কারণ হলো- সবকিছু খুলে দেওয়ার ফলে মানুষের চলাচল বাড়বে এবং যখন সামাজিক সংক্রমণ পিকে পৌঁছেছে তখন এই সামাজিক সংক্রমণ হার্ড ইমিউনিটির দিকে দেশকে নিয়ে যাবে।

এসময় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কি ধরণের প্রভাব পড়বে তা নিয়েও অর্থনীতিবিদরা নানারকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়েছেন। আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্যেই সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে। তাই আগামী ১ মাস বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সন্ধিক্ষণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। আগামী ১ মাস অর্থনীতির ক্ষেত্রে কি কি ঘটতে পারে তা নিয়ে যদি অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণগুলো দেখি তাহলে দেখা যাবে-

১. প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণ নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র গার্মেন্টস সেক্টরের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বিলিবণ্টন হয়েছে। বাকিগুলো নিয়ে এখনো কাজ শুরু হয়নি। আগামী ১ সপ্তাহের ভেতরে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যেন প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত এই প্রণোদনার ফল উপভোগ করে মানুষ।

২. আগামী ১ মাস প্রান্তিক দরিদ্র অসহায় মানুষদের সহায়তার কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং এই দরিদ্র মানুষের সহায়তা কার্ক্রম অব্যহত রাখতে গিয়ে সরকারের উপর অনেক বড় চাপ পড়বে এবং এই চাপ মোকাবেলা করেই সহায়তা কার্যক্রম কিভাবে সরকার চালু রাখে সেটা সরকারের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ।

৩. আমাদের আর্থিক খাতে সঙ্কট দেখা দিবে এবং নগদ অর্থের সঙ্কটে ভুগবে ব্যাংকগুলো, এই সঙ্কট মোকাবেলার জন্য আগামী ১ মাসে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সময় আমাদের বাজেট ঘোষণা করা হবে এবং বাজেটে করোনা সঙ্কটকে কিভাবে মানিয়ে নেওয়া হয় সেটাও একটি দেখার বিষয়।

৫. এই সময় কৃষকদের যে পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে সেই পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া এবং পরবর্তী পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা ব্যবস্থাপনা কতটুকু সূচারুভাবে হচ্ছে সেটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এবং সবশেষ জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আবার অর্থনৈতিক কাজ চালু করা একটি চ্যালেঞ্জ হবে। জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে অর্থনীতিকে চালু করার চিন্তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটাও আগামী ১ মাসে বোঝা যাবে। কাজেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আগামী ১ মাস বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামী ১ মাসে স্পষ্ট হয়ে যাবে বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটছে। আগামী ১ মাসে যা ঘটবে সেটার উপরেই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের অনেকখানি নির্ভর করছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশকে হারিয়ে শেষটা রাঙাতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ

আগামী ১ মাসে কি ঘটতে যাচ্ছে !!

আপডেট সময় ০৮:৩০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০

আকাশ জাতীয় ডেস্ক:

সবদিক থেকে বাংলাদেশে আগামী ১ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ১ মাসে সবকিছুই ঘটতে পারে বাংলাদেশে। এমন ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই করোনার সঙ্গে বসবাসের ঝুঁকি নিচ্ছে। আগামী রোববার থেকে সবকিছুই খুলে দেওয়া হচ্ছে। কাজেই পুরো জুন মাসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আমরা যদি দেখি যে, আগামী ১ মাসে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা কি ধরণের পূর্বাভাস দিচ্ছেন, তাহলেই পুরো সময়টার গুরুত্বটা আমরা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবো।

জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কি ঘটতে পারে?

জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা অনেকগুলো শঙ্কার পূর্বাভাস দিচ্ছেন, এই পূর্বাভাসগুলো হচ্ছে-

১. করোনা রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়বে এবং জটিল অবস্থার রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বাংলাদেশ হার্ড ইমিউনিটির দিকে যেতে পারে।

২. করোনা রোগীদের মধ্যে যারা একদম ক্রিটিক্যাল রোগী। যাঁদের আইসিইউ দরকার, ভেন্টিলেশন দরকার এমন রোগীদের জায়গা দেওয়া যাবেনা। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা হবে, বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়েই মারা যেতে পারে।

৩. শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসা নয়, হাসপাতালগুলো যখন অন্যান্য রোগী দিয়ে ভর্তি হয়ে যাবে তখন করোনা রোগীর চিকিৎসা করা দুরূহ বা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনী রোগের যাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন আছে, তাঁদের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে যেতে পারে।

৪. অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে যা হবে, আমাদের সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি সঙ্কটে পড়বে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কার মূল কারণ হলো- সবকিছু খুলে দেওয়ার ফলে মানুষের চলাচল বাড়বে এবং যখন সামাজিক সংক্রমণ পিকে পৌঁছেছে তখন এই সামাজিক সংক্রমণ হার্ড ইমিউনিটির দিকে দেশকে নিয়ে যাবে।

এসময় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কি ধরণের প্রভাব পড়বে তা নিয়েও অর্থনীতিবিদরা নানারকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়েছেন। আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্যেই সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে। তাই আগামী ১ মাস বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সন্ধিক্ষণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। আগামী ১ মাস অর্থনীতির ক্ষেত্রে কি কি ঘটতে পারে তা নিয়ে যদি অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণগুলো দেখি তাহলে দেখা যাবে-

১. প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণ নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র গার্মেন্টস সেক্টরের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বিলিবণ্টন হয়েছে। বাকিগুলো নিয়ে এখনো কাজ শুরু হয়নি। আগামী ১ সপ্তাহের ভেতরে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যেন প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত এই প্রণোদনার ফল উপভোগ করে মানুষ।

২. আগামী ১ মাস প্রান্তিক দরিদ্র অসহায় মানুষদের সহায়তার কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং এই দরিদ্র মানুষের সহায়তা কার্ক্রম অব্যহত রাখতে গিয়ে সরকারের উপর অনেক বড় চাপ পড়বে এবং এই চাপ মোকাবেলা করেই সহায়তা কার্যক্রম কিভাবে সরকার চালু রাখে সেটা সরকারের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ।

৩. আমাদের আর্থিক খাতে সঙ্কট দেখা দিবে এবং নগদ অর্থের সঙ্কটে ভুগবে ব্যাংকগুলো, এই সঙ্কট মোকাবেলার জন্য আগামী ১ মাসে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সময় আমাদের বাজেট ঘোষণা করা হবে এবং বাজেটে করোনা সঙ্কটকে কিভাবে মানিয়ে নেওয়া হয় সেটাও একটি দেখার বিষয়।

৫. এই সময় কৃষকদের যে পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে সেই পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া এবং পরবর্তী পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা ব্যবস্থাপনা কতটুকু সূচারুভাবে হচ্ছে সেটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

এবং সবশেষ জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আবার অর্থনৈতিক কাজ চালু করা একটি চ্যালেঞ্জ হবে। জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে অর্থনীতিকে চালু করার চিন্তা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটাও আগামী ১ মাসে বোঝা যাবে। কাজেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আগামী ১ মাস বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামী ১ মাসে স্পষ্ট হয়ে যাবে বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটছে। আগামী ১ মাসে যা ঘটবে সেটার উপরেই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের অনেকখানি নির্ভর করছে।