ঢাকা ০১:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুভি দেখে খেলনা পিস্তল দিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করে তারা

আকাশ জাতীয় ডেস্ক :

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপুল এলাকায় অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ডাকাতি চেষ্টার ঘটনাটি ছিল ‘কিশোর অ্যাডভেঞ্চার’। এ ঘটনায় যে তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের দুজনের বয়স ১৬, একজনের বয়স ২২।

তিনটি খেলনা পিস্তল দিয়ে তারা ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়েছিল। ব্যাংক ডাকাতি করতে তারা বিভিন্ন মুভি ও অনলাইনে ভিডিও দেখে।

বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক ব্রিফে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ। তিনি বলেন, ব্যাংক ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যেভাবে কার্যক্রম চালিয়েছে তা অভূতপূর্ব। ওদের সঙ্গে মোবাইলে আমরা দফায় দফায় কথা বলেছি। একপর্যায়ে আইজি স্যারও ওদের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণের আহবান জানান। এরপর ওরা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

তিনি বলেন, ওদের দাবি ছিল- একজন কিডনি রোগীকে সাহায্য করার জন্য ওদের ১৫ লাখ টাকা ও নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা ওদের কথায় রাজি হই। আমরা ওদের অস্ত্র জমা দিতে বলি। একপর্যায়ে ওরাও রাজি হয়। অস্ত্র জমা দেয়। ৩টি পিস্তল (খেলনা পিস্তল) ও দুটি ছুরি। এরপর ব্যাগে ১৫ লাখ টাকা ও তিনজন প্যান্টের পকেটে ৩ লাখ টাকা নিয়ে বেরিয়ে আসে।

আত্মসমর্পণ করা যুবকরা হলেন- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কুমুরিয়া গ্রামের মো. কবির মোল্লার ছেলে মো. লিয়ন মোল্লা নিরব (২২)। তিনি পেশায় গাড়িচালক। তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকায় থাকেন। অপর দুই কিশোর- দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার কামাল পারভেজের ছেলে মো. আরাফাত (১৬) ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার আব্দুল্লাহর ছেলে মো. সিফাত (১৬)। এদের মধ্যে আরাফাত লাইসিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ও সিফাত জিয়ানগরের তাবিয়াতুল উম্মাহ মাদ্রাসার ছাত্র (পাঁচ পারা হাফেজ)।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ডাকাতির আগে তারা বেশ কিছু মুভি দেখে। এরপর তারা পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই প্রায় একই রকম ড্রেস পরিধান করে ব্যাংকে ঢুকে। এ সময় ওদের মাথায় ক্যাপ ও মুখে মাস্ক ছিল।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে ওই ৩ কিশোর ব্যাংকে ঢুকে কেঁচি গেট নিজেরাই ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। এ সময় ব্যাংকের কোনো গার্ড গেটে ছিলেন না। ব্যাংকে ৬ জন গ্রাহক ও ৮ জন স্টাফ ছিলেন। তারা ভেতরে ঢুকেই একজন গ্রাহকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। বাকিদের নিজ নিজ জায়গায় চুপচাপ বসে থাকতে বলে। এভাবে তারা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে ওরা ব্যাংকে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিষয়টি এলাকাবাসী জেনে যান। মাইকে ব্যাংক ডাকাতির বিষয়টি প্রচার করা হলে ঘটনাস্থলে শত শত জনতা এসে ব্যাংক ঘিরে ফেলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক ঘণ্টা নেগোসিয়েশনের পর তারা আত্মসমর্পণ করে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুভি দেখে খেলনা পিস্তল দিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করে তারা

আপডেট সময় ০৮:৪০:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আকাশ জাতীয় ডেস্ক :

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপুল এলাকায় অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ডাকাতি চেষ্টার ঘটনাটি ছিল ‘কিশোর অ্যাডভেঞ্চার’। এ ঘটনায় যে তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের দুজনের বয়স ১৬, একজনের বয়স ২২।

তিনটি খেলনা পিস্তল দিয়ে তারা ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়েছিল। ব্যাংক ডাকাতি করতে তারা বিভিন্ন মুভি ও অনলাইনে ভিডিও দেখে।

বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক ব্রিফে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ। তিনি বলেন, ব্যাংক ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যেভাবে কার্যক্রম চালিয়েছে তা অভূতপূর্ব। ওদের সঙ্গে মোবাইলে আমরা দফায় দফায় কথা বলেছি। একপর্যায়ে আইজি স্যারও ওদের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণের আহবান জানান। এরপর ওরা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

তিনি বলেন, ওদের দাবি ছিল- একজন কিডনি রোগীকে সাহায্য করার জন্য ওদের ১৫ লাখ টাকা ও নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা ওদের কথায় রাজি হই। আমরা ওদের অস্ত্র জমা দিতে বলি। একপর্যায়ে ওরাও রাজি হয়। অস্ত্র জমা দেয়। ৩টি পিস্তল (খেলনা পিস্তল) ও দুটি ছুরি। এরপর ব্যাগে ১৫ লাখ টাকা ও তিনজন প্যান্টের পকেটে ৩ লাখ টাকা নিয়ে বেরিয়ে আসে।

আত্মসমর্পণ করা যুবকরা হলেন- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কুমুরিয়া গ্রামের মো. কবির মোল্লার ছেলে মো. লিয়ন মোল্লা নিরব (২২)। তিনি পেশায় গাড়িচালক। তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকায় থাকেন। অপর দুই কিশোর- দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার কামাল পারভেজের ছেলে মো. আরাফাত (১৬) ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার আব্দুল্লাহর ছেলে মো. সিফাত (১৬)। এদের মধ্যে আরাফাত লাইসিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ও সিফাত জিয়ানগরের তাবিয়াতুল উম্মাহ মাদ্রাসার ছাত্র (পাঁচ পারা হাফেজ)।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ডাকাতির আগে তারা বেশ কিছু মুভি দেখে। এরপর তারা পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই প্রায় একই রকম ড্রেস পরিধান করে ব্যাংকে ঢুকে। এ সময় ওদের মাথায় ক্যাপ ও মুখে মাস্ক ছিল।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে ওই ৩ কিশোর ব্যাংকে ঢুকে কেঁচি গেট নিজেরাই ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। এ সময় ব্যাংকের কোনো গার্ড গেটে ছিলেন না। ব্যাংকে ৬ জন গ্রাহক ও ৮ জন স্টাফ ছিলেন। তারা ভেতরে ঢুকেই একজন গ্রাহকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। বাকিদের নিজ নিজ জায়গায় চুপচাপ বসে থাকতে বলে। এভাবে তারা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে ওরা ব্যাংকে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিষয়টি এলাকাবাসী জেনে যান। মাইকে ব্যাংক ডাকাতির বিষয়টি প্রচার করা হলে ঘটনাস্থলে শত শত জনতা এসে ব্যাংক ঘিরে ফেলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক ঘণ্টা নেগোসিয়েশনের পর তারা আত্মসমর্পণ করে।