আকাশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজায় ১৪ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান হতে পারে খুব শিগগিরই। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তির বিষয়ে আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় কায়রোতে চলমান আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
মাসের পর মাস ধরে কাতার ও মিশরের পাশাপাশি ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি করানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী মাসে ক্ষমতা ছাড়ার আগে তার প্রশাসন এই উদ্যোগে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এবং ইসরায়েলও বলেছে, আমরা চুক্তির কাছাকাছি। তবে আমাদের আশাবাদে এখনো কিছুটা সতর্ক থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, আমরা এর আগে এমন অবস্থানে পৌঁছেছি, কিন্তু চূড়ান্ত রূপ দিতে পারিনি।
চুক্তি চূড়ান্ত করতে সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানির সঙ্গে বুধবার দোহায় বৈঠক করার কথা রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকের লক্ষ্য হচ্ছে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে থাকা বাকি অমিলগুলো দূর করা।
খবরে বলা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই চুক্তি সই হতে পারে। এর মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হবে এবং হামাসের হাতে থাকা বন্দি ও ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় সম্পন্ন হবে।
হামাস জানিয়েছে, কাতার ও মিশরের উদ্যোগে দোহায় যে ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা চলছে, তা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি সম্ভব করতে পারে, যদি ইসরায়েল নতুন কোনো শর্ত আরোপ না করে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, চুক্তি আগে কখনো এতটা কাছাকাছি আসেনি। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি মার্কিন দূত অ্যাডাম বোহলার-এর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
ফ্লোরিডায় এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে হামাস তাদের বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। তিনি আরও বলেন, যদি আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় পর্যন্ত চুক্তি না হয়, তাহলে এটি মোটেও সুখকর হবে না।
হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর আকস্মিক ইসরায়েল আক্রমণ করলে গাজা সংকটের সূচনা হয়। সেই হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, আর অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলেছে এবং ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।