অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব দাখিল করেছেন প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেট দলের প্রতিনিধি ব্রাড শারম্যান। তিনি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমি’কে বরখাস্ত করার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করেছেন। তিনি শপথ লঙ্ঘন করেছেন। লঙ্ঘন করেছেন সাংবিধানিক দায়িত্ব। তিনি তদন্ত চলাকালে তাতে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
প্রতিনিধি পরিষদের কাছে লেখা এক আর্টিকেলে তিনি লিখেছেন, এমন ঘটনা অভিশংসন ও বিচারের দাবি রাখে। এমনকি তাকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ারও দাবি রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহ, ঘুষ গ্রহণ, উচ্চ মাত্রার অপরাধ, অশালীন আচরণের জন্য অভিশংসন করা যায়। তবে বিচারে বাধা সৃষ্টি করা একটি গুরুতর অপরাধ। ব্রাড শারম্যানের এই আর্টিকেল আমলে নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদ যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস করে তাহলেই বাকি পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হওয়া যাবে। কিন্তু তার এ আর্টিকেল পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম । কারণ, প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণ এখন রিপাবলিকানদের হাতে। এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসনের বিষয়ে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন টেক্সাটের ডেমোক্রেট দলের প্রতিনিধি অল গ্রিন।
এখানে উল্লেখ্য, গত মাসে যখন আর্টিকেলটির খসড়া সবার মাঝে বিতরণ করা শুরু করেন ব্রাড শারম্যান তখন ডেমোক্রেট দলের প্রতিনিধি পরিষদের আরেক প্রতিনিধি মাইকেল ক্যাপুয়ানো দলীয় এক সভায় দাঁড়িয়ে যান এবং শারম্যানের এমন কর্মকা-ের নিন্দা জানান। তাকে স্বার্থপর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এবার বুধবার তার আর্টিকেলের ওপর একটি বিবৃতি দিয়েছেন শারম্যান। তিনি বলেছেন, তিনি আশা করেন না যে, অবিলম্বে অভিশংসন করা হবে। তা সত্ত্বেও তিনি আশা করেন, এতেহ হোয়াইট হাউজের বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিষয়টি উৎসাহিত হবে। অনিয়ন্ত্রিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী শাখাগুলোকে উৎসাহিত করবে। তিনি তার আর্টিকেলে প্রথমেই উল্লেখ করেছেন বরখাস্তকৃত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের প্রসঙ্গ। বলেছেন, এ বিষয়ে তদন্ত বন্ধ করতে জেমস কমিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
গত মাসে সিনেটের শুনানিতে জেমস কমি বলেছেন, তাকে ব্যক্তিগতভাবে মাইকেল ফ্লিন সম্পর্কে তদন্ত বাদ রাখতে বলেছিলেন ট্রাম্প। ব্রাড শারম্যান তার আর্টিকেলে এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমি’কে বরখাস্তের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। রাশিয়া ইস্যুতে জেমস কমি যে তদন্ত করছিলেন সেখানেই ট্রাম্প একই নির্দেশ দিয়েছেন। হোয়াইট হাউজ থেকে জেমস কমিকে বরখাস্তের ভিন্ন ভিন্ন অনেকগুলো কারণ দেখানো হলেও এনবিসিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া ইস্যুতে যা বলা হচ্ছে তা একটি বানানো কাহিনী। শেষে এই বরখাস্ত নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেয়া মন্তব্য তুলে ধরেছেন ব্রাড শারম্যান। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কর্মকর্তাদের তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কারণে আমাকে অনেক বড় চাপের মুখে পড়তে হয়েছে।
জেমস কমি’কে বরখাস্তের পর আইন মন্ত্রণালয় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্ত করতে একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়েছে। তিনি রবার্ট মুয়েলার। ট্রাম্প বিচারের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছেন কিনা তা তদন্ত করছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় নি।